একজন সুস্থ মা ,একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে পারে। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাস অনুসরণ করলে মায়েদের সুস্থ গর্ভধারণ ও একটি সুন্দর শিশুর জন্মদানের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তাই গর্ব অবস্থায় পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ মা ও শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সুস্থ ও স্বাভাবিক সন্তান দানের প্রধান শর্ত হলো গর্ভবতী মাকে সঠিক মত পরিচর্যা করা।
গর্ভকালীন প্রথম তিন মাস অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ সময় নারীর খাবারের প্রতি অরুচি ভাব আসে, বমি বমি ভাব হয়, ওজন কমে যায় ,শরীরের রক্তশূন্যতা চলে আসে, তাই পরিবার সদস্যদের সঠিক তালিকা অনুযায়ী গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা পরিবর্তন করতে হবে। এই অবস্থায় তাদের কি খাবার দিতে হবে আর কি দিতে হবে না এটা পরিবারের সদস্যদের জানা জরুরি। তাই আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানিয়ে দেবো গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকা।
গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসের খাবার তালিকা:
গর্ভের সন্তান ধরনের প্রথম তিন মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম তিন মাস ভ্রুনের তেমন একটা বৃদ্ধি ঘটে না, তাই এ সময় সেটাকে বৃদ্ধি করার জন্য গর্ভবতী মায়েদের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ খেতে হয়। তাই প্রথম এই তিন মাস গর্ভবতী মায়েদের খাবারের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি হিসেবে দেখতে হয়। প্রথম তিন মাস যে সকল মায়েদের খাদ্য তালিকায় যে সকল খাদ্য রাখা দরকার।
১.বিভিন্ন শাকসবজি
২. আমিষ জাতীয় মাছ ও মাংস
৩. কলিজা
৪. আশ জাতীয় খাবার ও
৫. ভিটামিন যুক্ত ফলমূল।
এ সময় গর্ভবতী মায়েদের ফলিক এসিড খুব প্রয়োজন। আর এ সকল খাবার প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড রয়েছে, যেটার চাহিদা একটি গর্ভবতী মায়ের পূরণ করবে।
গর্ভবতী মায়ের চার থেকে নয় মাসের খাবার তালিকা:
গর্ভের শিশু বড় হওয়ার সাথে সাথে গর্ভবতী মায়েদের খাবার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের পর থেকে খাওয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বাড়াতে হয়। একজন গর্ভবতী নারীকে প্রথম তিন মাসের পর থেকে ৩৪০ ক্যালোরি খাবার বাড়িয়ে দিতে হয়। অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা পূরণের জন্য তিন বেলা খাবারের পাশাপাশি আরো দুবার হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। খাবার টি হতে পারে উচ্চ ভিটামিন জাতীয় ফল , বাদাম, আধা কাপ টক দই ইত্যাদি। এছাড়া আপনার ক্ষুধা লাগলে আপনি যেকোনো সময় পরিমাণ মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারেন।
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা PDF:
গর্ভবতী মায়েদেরকে ছয় ধরনের খাবার একটু বেশি বেশি করে খেতে দিতে হবে, কারণ এই ছয় ধরণের খাবার খেয়ে দিলে শিশু ও মা দুজনেই ভালো থাকবে। শর্করা খাবার যেমন ভাত রুটি, তারপরে গারো সবুজ ওর শাক, হলুদ রঙের ফলমূল, ডিম দুধ মাছ মাংস ইত্যাদি এই খাবারগুলো নিয়মিত গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় রাখতে হবে। তাছাড়া এসব খাবারের তালিকার পাশাপাশি, আমলকি আমড়া ,জলপাই, লেবু, কমলা ,মালটা ইত্যাদি যে সকল খাদ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে,এই খাবারগুলোকে গর্ভের শিশুকে শিশুর ত্বক ও রক্তনালীর হার্ট ভালো রাখে। তাছাড়া আপনাদের সুবিধা জন্য আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে গর্ভবতী মায়েদের জন্য পিডিএফ ফাইল আকারে ছবি প্রকাশ করেছি। আপনারা চাইলে আমাদের ওয়েব সাইটে এসে গর্ভবতী মায়েদের খাবারের তালিকার ছবিগুলো দেখে নিতে পারেন।
গর্ভবতী অবস্থায় যে সকল খাবার খাওয়া যাবে না:
গর্ভবতী অবস্থায় অতিরিক্ত তেল চর্বি খাবার খাওয়া যাবেনা। ভাজাপোড়া, পরোটা ,মিষ্টি, কেক পেজটি এগুলোতে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব থাকে। এসব খাবার গর্ভবতী নারীরা খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি থাকে, ও হার্টের নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। গর্ভবতী নারীদের যে সকল খাওয়া একেবারে যাবেনা।
মাখন
ঘি
ডালডা
ক্রিম
ভাজাপোড়া
চিপস
কেক
পেস্টি
আইসক্রিম
বিভিন্ন ধরনের ড্রিঙ্কস যেমন কোকোকোলা
এগুলো খেলে ক্যালরি কমে যায়। ফলে এদিকে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দেখা যায়। গর্ভবতী অবস্থায় এই খাবারগুলো যতটা কম খাওয়া যায়। এগুলোর বদলে উচ্চ প্রোটিন জাতীয় ভিটামিন ও আমিষ জাতীয় খাদ্য বেশি খেতে হবে।
আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা আপনাদের জানিয়ে দিলাম একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় কি কি খাবার রাখা প্রয়োজন। কারণ এ অবস্থায় কি কি খাবার খেতে হয় আর কি কি খেতে হয় না অনেকেই জানেন না। তাই আমাদের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে পড়ুন এবং দেখে নিন গর্ভবতী মায়েদের খাবার তালিকায় কি কি রাখা উচিত।