অনেকে পড়াশোনা শেষ করে অনেক কিছু হতে চাই অনেকের অনেক স্বপ্ন থাকে, আবার অনেকেরই ইচ্ছে থাকে বড় হয়ে তিনি ম্যাজিস্ট্রেট হবেন। কিন্তু সঠিক তথ্য না থাকার কারণে অনেকেই জানেন না কিভাবে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়া যায়। এজন্য আপনি যদি ম্যাজিস্ট্রেট হতে চান আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে কিছু তথ্য আপনাদেরকে দিয়ে যাব। যদি আপনার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট হতে যাওয়া তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন ও সকল তথ্য বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন।
ম্যাজিস্ট্রেট কাকে বলে?
একজন ম্যাজিস্ট্রেট মানে, যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একজন বিসিএস ক্যাডার। যিনি একটি জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত থাকে। তিনি জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও পরিচিত। একটি জেলার প্রশাসনিক এর অধীনে আইন শৃঙ্খলা ,কৃষি ব্যবস্থা, এবং সরকারি সমস্ত প্রকল্প ও জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলা রয়েছে, প্রতিটি জেলায় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য একটি করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যুক্ত রয়েছে।
ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা ২০২২
ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে সাধারণত যেকোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেকোনো সাবজেক্ট নিয়ে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে, বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার উন্নীত হতে হবে। বি সি এস পরীক্ষার নিয়োগ প্রাপ্তর মাধ্যমে আপনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারবেন। তবে ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা দশ অনুযায়ী সরকার চাইলে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কে সীমিত আকারে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার ক্ষমতা অর্পণ করতে পারে। জেলার সর্বোচ্চ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বলা হয় ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট। আর মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য রয়েছে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
ম্যাজিস্ট্রেটের এর কাজ
১. আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা।
২. সরকারের কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন দেওয়া।
৩. বিভাগীয় কমিশনার কে সকল কাজে অবহিত করা।
৪. বিভাগীয় কমিশনার উপস্থিত না থাকলে ,সে ক্ষেত্রে তার দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা।
৫. পুলিশ ও কারাগার পরিদর্শন করা।
ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা :
ফৌজদারী কার্যবিধির বিধান অনুসারে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সাধারণ ক্ষমতা গুলো হল
১. ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধকারী কে গ্রেফতার করা ও এবং অপরাধকারীকে হেফাজতে রাখার ক্ষমতা। (ধারা ৬৪)
২. গ্রেফতার করার ক্ষমতা ও গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারি করতে পারবেন । (ধারা ৬৫)
৩. সরাসরি তল্লাশি করা ক্ষমতা। (ধারা ১০৫)
৪. ওয়ারেন্ট অনুমোদন করার ক্ষমতা, বা ওয়ারেন্ট ধারার অধীনে গ্রেপ্তার কৃত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অপসারণের আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা। (ধারা ৮৩ ,৮৪, ৮৬)
৫. বেআইনের সমাবেশকে ছএ ভঙ্গ করে দেয়ার ক্ষমতা। (ধারা ১২৭)
৬. শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তা প্রয়োজনের ক্ষমতা
ধারা। (১০৭)
৭. অভ্যাসকারী অপরাধীর কাছে থেকে ভালো আচরণ জামিন প্রদানের ক্ষমতা (ধারা ১২৬)
৮. বেআইনি সমাবেশ কে ছএ ভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি ব্যবহার করা।( ধারা১২৮)
ম্যাজিস্ট্রেট হতে গেলে শারীরিক যোগ্যতা:
ম্যাজিস্ট্রেট হতে হলে একজন প্রার্থীকে অবশ্যই তার বয়স সীমাটি লক্ষ্য করতে হবে। তার বয়স ২৫ থেকে ৩৫ হতে হবে তবে সে ম্যাজিস্ট্রেট হতে পারবে। কারণ একজন ম্যাজিস্ট্রেটের প্রার্থীর বয়স না হলে সে তার আবেদন ফরমে আবেদন করতে পারবে না।
একজন ম্যাজিস্ট্রেটের বেতন কত?
একজন ম্যাজিস্ট্রেটের প্রথমে স্কেল শুরু হয় ষষ্ঠ গ্রেডের মাধ্যমে, যার বেতন ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে শুরু, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এর ষষ্ঠ গ্রেড ৩৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৬৭ হাজার পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকবে। যারা সরাসরি বিসিএস এর মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করবেন তাদের প্রথম বেতন স্কেল হবে ৯ম গ্রেটে। তবে ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যবিধির উপর প্রতিবছর তাদের পদোন্নতি হবে এবং পদোন্নতির মাধ্যমে তাদের বেতন স্কেল পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি হবে এবং তাদের পদোন্নতি হবে।
আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার উপায় ও ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার যোগ্যতা বিস্তারিত কিছু তথ্য আপনাদের জানাতে পেরেছি। আপনি যদি ভবিষ্যতে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন থাকে তাহলে উপরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। আশা করি আপনি ভাল ফলাফল পাবেন। এ সম্পর্কিত আরো বিস্তারিত তথ্য পেতে হলে প্রতিনিয়ত আপনারা আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন আমরা প্রতিনিয়ত আপনাদের জন্য আপডেট তথ্য প্রেরণ করে থাকি।