মুসলমানদের প্রধান অন্যতম ধর্মীয় উৎসব হলো ঈদ। একটি হলো ঈদুল ফিতর আর অন্যটি হলো ঈদুল আযহা এই দুটি ঈদ মুসলমানদের জীবনে দু‘রকম ভাবে আসে। একটি হলো রমজান মাসের ৩০টা রোজা রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা ও অন্যটি জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পশু কুরবানী দিয়ে ঈদ উল আযহা উদযাপন করা। তবে ঈদ বছর ঘুরে আসে, অনেকেই ঈদের নামাজের নিয়ম,নিয়ত ও তাকবীর ভুলে যাই। তাই ঈদের নামাজ যথাযথভাবে পড়ার জন্য নিয়ম নিয়ত ও তাকবীর আজকের এই আর্টিকেলে দেওয়া হল।
ঈদের নামাজ কি?
ঈদের নামাজ হলো সুন্নতে মক্কা ইবাদত। ঈদের নামাজ সাদ বিহীন খোলা জায়গাতে পড়তে হবে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) খোলা জায়গাতে ঈদের নামাজ আদায় করতেন। তবে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে খোলা জায়গাতে নামাজ আদায় না করতে পারলে মসজিদে নামাজ পড়া যাবে। তবে ঈদের নামাজ ছাদ যুক্ত বা যে কোন স্থানে পড়া যাবে তবে এটা অবশ্যই জামাতের সহিত ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।
ঈদের নামাজের জন্য কোন আযান বা ইকামত দেয়ার নিয়ম নেই তবে জুম্মার নামাজের মত জোরে জোরে উচ্চস্বরে নামাজ আদায়ের সময় ইমামকে সূরা পড়তে হবে। ঈদের নামাজের পার্থক্য হল অতিরিক্ত ছয় তাকবীর দিতে হয়। ঈদের নামাজ সাধারণ নামাজের মত নয় একটু ভিন্ন, এই নামাজের বিশেষ কিছু নিয়ম আছে। এই নিয়ম অনুসরণ করে নামাজ আদায় করতে হয়। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে এটা অবশ্যই জামাতের সঙ্গে নামাজটি আদায় করতে হবে ও ছয় তাকবীরে এটা শেষ করতে হবে।
ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম:
বছর ঘুরে ঈদ আসার পর অনেকেই ঈদের নামাজের নিয়ম ভুলে যায়। আপনারা যারা ঈদের নামাজ আদায়ের নিয়ম জানেন না, আমরা তাদের জন্য সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি জানানোর চেষ্টা করছি।
ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল ও অজু সেরে নিতে হবে। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে নতুন পোশাক নয়তো বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতে হবে।
ঈদের নামাজ পড়ার কিছু নিয়ম
১. প্রথমে আপনাকে স্বাভাবিক নামাজের মতই তাকবীরে তাহরীমা পড়ে হাত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলতে হবে। এবং ঈদের দুই রাকাত নামাজ আদায় করার জন্য আপনাকে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হবে।
২. এরপর ছানা পড়তে হবে
৩. তাকবীর দিতে হবে। প্রথমে দুই তাকবীর দেওয়ার পর হাত ছেড়ে দিতে হবে, এবং তৃতীয় তাকবীরে আবার হাত বাঁধতে হবে।
৪. এখন বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বলে, ইমাম সুরা ফাতেহার সাথে অন্য সূরা পাঠ করতে থাকবে, আমরা যারা পিছনে থাকবো এই সকল সূরা আমরা মনে মনে পাঠ করতে থাকবো। আর আমাদের যদি সূরা মুখস্ত না থাকে ইমাম যে সূরা পাঠ করবে সেগুলো খুব মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে
৫. আমরা স্বাভাবিক নামাজের সময় যে রুকু ও সিজদা দিয়ে থাকি সেভাবেই প্রথম রাকাতে নামাজ শেষ করতে হবে।
৬. তারপর দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম যখন সুরা পাঠ করবে তখন প্রথম রাকাতের মত দ্বিতীয় রাকাতে যারা সূরা পারবেন ইমামের সঙ্গে পড়তে পারবেন নয়তো চুপ করে মনোযোগ সহকারে ইমামের সূরা পাঠ করা শুনতে হবে। কেরাত পাঠ করার পর অর্থাৎ রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত তাকবীর দিতে হবে।
৭. প্রথম রাকাতের মতো দ্বিতীয় রাকাতেও রুকু ও সিজদা শেষ করতে হবে। তারপরে বৈঠকে বসে দরুদ শরীফ, দোয়া মাসুরা, পড়া শেষ করে সালাম ফিরিয়ে ঈদের দুই রাকাত নামাজ শেষ করতে হবে।
৮. ঈদের নামাজ শেষে ইমাম সাহেব খুতবা শুরু করবে, খুতবা গুলো খুব মনোযোগ সহকারে আমাদের শুনতে হবে।
৯. একটি বিষয় মনে রাখতে হবে ঈদের নামাজে যাবার সময় আপনি যে পথ ধরে গিয়েছেন আসার সময় ঠিক তার বিপরীত পথ দিয়ে আসাটা উত্তম হবে। তবে বিকল্প পথ না থাকলে সমস্যা নেই আপনি ওই রাস্তা দিয়ে আসতে পারেন।
যেহেতু ঈদের নামাজ বছর পর আসে তাই যারা ঈদের নামাজের নিয়ম জানতেন না বা ভুলে গিয়েছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানিয়ে দিলাম।